দুই মাস পর তেঁতুলিয়া নদীতে আবারও শুরু মাছ শিকার

২ মে ২০২৫, ১১:৫২:৪৫

টানা দুই মাস পর জেলেদের জালে ফিরে এসেছে জীবনের সুর। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর মধ্য রাত থেকে সকাল হতেই জেগে উঠেছে পটুয়াখালীর তেঁতুলিয়া নদী। নদী পাড়ের ঘাটগুলো যেন আবারও ফিরে পেয়েছে হারানো প্রাণ। সকাল থেকেই জাল ও ট্রলার নিয়ে নদীতে নেমেছেন জেলেরা। তাই ফের কর্মচাঞ্চল্যে মুখর হয়ে উঠেছে উপকূলের জেলে পল্লী গুলো।

প্রতিবছরের মতো এবারও মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস দেশের ছয়টি ইলিশ অভয়াশ্রমে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এই সময়টায় মূলত জাটকা সংরক্ষণে কঠোরভাবে কার্যকর করা হয় নিষেধাজ্ঞা। এর আওতায় পড়ে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চররুস্তুম থেকে শুরু করে ভোলার ভেদুরিয়া পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর প্রায় ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ জলসীমা।

এই দুই মাসে চরম দুর্দশায় দিন কাটিয়েছেন উপকূলের হাজারো জেলে পরিবার। জেলেরা জানান, মাছ শিকার বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে চলাই দায় হয়ে পড়েছিল। দুই মাস অনেকেরই একমুঠো ভাত জোটেনি নিয়মিত। সরকার কিছু খাদ্য সহায়তা দিলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় ছিল অপ্রতুল। ফলে বহু জেলে পরিবার বাধ্য হয়ে ঋণের আশ্রয় নিয়েছে। স্থানীয় মহাজনদের চড়া সুদের জালে বন্দি হয়েছে তাদের ভবিষ্যৎ।

দুইমাসের পর উপকূলের জেলে পল্লীগুলোতে এখন বইছে নতুন আশার হাওয়া। দীর্ঘ সময়ের অবসরের পর নদীতে ফিরে পাওয়া কর্মপরিবেশ যেন সবার চোখে মুখে এনে দিয়েছে প্রাণচাঞ্চল্য। শিশুদের হাসি, নারীদের ব্যস্ততা, আর জেলেদের ব্যস্ত হাতে জাল গুটানোর দৃশ্য সব মিলিয়ে যেন ফিরে এসেছে জীবন। তেঁতুলিয়া নদীর বুকে ভেসে চলা এসব ট্রলার এখন শুধু মাছ নয়, বয়ে আনছে হাজারো পরিবারের বেঁচে থাকার স্বপ্নও।

রাঙ্গাবালী উপজেলার জেলে হারুন মাঝি জানান, এতদিন মাছ শিকার বন্ধ থাকায় কর্মহীন  দিন কাটাতে হয়েছে। বেকার সময় গুলো আমাদের কেটেছে খেয়ে না খেয়ে।  এখন নদীতে যদি ইলিশের ধরা পরে, তবে ঋণ পরিশোধ করে ঘুরে দাড়াতে পারবো। নদীতে নামলেই এখন মনে হয় আবার বাঁচতে পারব।

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, সরকার ইলিশের প্রজনন ও জাটকা সংরক্ষণের জন্য এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এর পেছনে বৈজ্ঞানিক যৌক্তিকতা আছে। দুই মাস পর নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে গত মধ্য রাতেই। এখন শুধু অপেক্ষা ভালো মাছের মৌসুমের। তাহলে দু’মাসে জেলেদের কষ্ট কিছুটা হলেও সার্থক হবে বলে আশা করছি।

Unauthorized use of news, image, information, etc published by দৈনিক আমাদের পটুয়াখালী is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.