দেশে কর্মীরা মার খাচ্ছে, লন্ডনে বিয়ে খাচ্ছেন আ.লীগের মন্ত্রীরা

দেশের হাজারো তৃণমূল কর্মী যখন খেয়ে না খেয়ে, জেল-হুলিয়ার আতঙ্কে, নিঃসঙ্গ জীবনে দিন গুনছেন—ঠিক তখনই সেই দলের নেতারা আয়েশী জীবনযাপনে ব্যস্ত। ২০ এপ্রিল, লন্ডনের ওটু এরিনার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক তার পুত্র ফাইয়াজ রহমানের বিবাহ অনুষ্ঠান আয়োজন করেন। কিন্তু এই বিয়ে হয়ে ওঠে পলাতক আওয়ামী নেতাদের এক রাজকীয় গেট টুগেদার।
ঝলমলে আলোকসজ্জা, কাঁচের ছাদ থেকে ঝুলে থাকা বিলাসী ঝাড়বাতির নিচে একে একে হাজির হন সেই সব পরিচিত মুখ—যারা কিছুদিন আগেই দেশজুড়ে আলোচনায় ছিলেন দুর্নীতি, দমন-পীড়ন, ভোট ডাকাতি এবং বিচার এড়িয়ে বিদেশে পালানোর অভিযোগে।
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাসান মাহমুদ, সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান, সাবেক নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী, সিলেটের প্রভাবশালী নেতা শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং সাবেক সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান—সবাই ছিলেন সেই আনন্দমেলায়। মুখে ছিল আনন্দের হাসি, গায়ে রাজকীয় পোশাক, হাতে সেলফি আর পেছনে ছিল হাজারো জনতার প্রশ্ন—এই লোকগুলো কিভাবে এখানে?
অনুষ্ঠানে তাদের মুখে ছিল না কোনো অনুশোচনা, নেই কোন ব্যাখ্যা। কেউ বলছেন “ঈদ করতে এসেছি”, কেউ বলছেন “ছেলের সঙ্গে সময় কাটাতে এসেছি”। বাস্তবতা হলো, এরা সবাই সেই তালিকায়, যাঁরা গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের প্রাক্কালে চুপিসারে দেশ ছেড়েছিলেন। এখন যখন দেশে অবস্থানরত তৃণমূল নেতাকর্মীরা গ্রেফতার, মামলা, নিপীড়নের শিকার, তখন সেই নেতারা লন্ডনের ঠান্ডা হাওয়ায় বিলাসের পৃষ্ঠপোষকতায় দিন পার করছেন।
যুক্তরাজ্য যুবলীগের একজন নেতা, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, ক্ষোভ নিয়ে বলেন— “দেশে হাজারো নেতাকর্মী রক্ত দিচ্ছে, কারাগারে যাচ্ছে, অথচ যারা তাদের নেতৃত্ব দিতো, তারা পালিয়ে বিলাসে ব্যস্ত—এটা ভাবতেও লজ্জা লাগে।”
আসলে প্রশ্ন এখানেই—নেতৃত্ব কি শুধুই সুবিধাভোগের নাম? যারা বিপদে পাশে থাকে না, তারা কি আদৌ নেতা?
Unauthorized use of news, image, information, etc published by দৈনিক আমাদের পটুয়াখালী is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.