For Advertisement
পবিপ্রবিতে পুনরুজ্জীবিত বেগম জিয়ার উপহার এ্যাম্বুলেন্স: উপাচার্যের প্রশংসনীয় উদ্যোগ

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের জরুরি চিকিৎসা সেবায় ব্যবহারের জন্য ২০০৩ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া একটি অ্যাম্বুলেন্স উপহার দিয়েছিলেন। সেই সময় এটি ক্যাম্পাসের চিকিৎসা সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও পরবর্তীতে অবহেলা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে এটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল বরিশাল ক্যাম্পাসের এক কোণে। তবে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলামের উদ্যোগে এটি পুনরায় সচল হয়ে শিক্ষার্থীদের সেবায় যুক্ত হয়েছে।
দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে পরিবর্তন আসে। ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেয় অ্যাম্বুলেন্সটিকে মূল ক্যাম্পাস থেকে সরিয়ে বরিশাল ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করার। সেখানে বছরের পর বছর এটি অযত্নে পড়ে থেকে প্রায় অচল হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামে থাকা হলের নাম পরিবর্তন করে শেরে বাংলা হল রাখা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও এতদিন কেউ উদ্যোগ নেয়নি এটি পুনরুদ্ধার করার জন্য। তবে বর্তমান উপাচার্য দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বরিশাল ক্যাম্পাস পরিদর্শনে গেলে ক্যাম্পাসের এক কোণে অ্যাম্বুলেন্সটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে মর্মাহত হন। সাথে সাথেই তিনি পরিবহন কর্মকর্তাকে ডেকে এর কারণ জানতে চান এবং দ্রুত সংস্কারের নির্দেশ দেন।
উপাচার্যের নির্দেশে শুরু হয় সংস্কার কাজ। পরিবহন শাখার তত্ত্বাবধানে অ্যাম্বুলেন্সটির ইঞ্জিন, চাকা, পাওয়ার সিস্টেম, লাইট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় অংশ মেরামত করা হয়। দীর্ঘদিনের অযত্নে জীর্ণ হয়ে পড়া গাড়িটি নতুন করে প্রাণ ফিরে পায়। অবশেষে ১৮ মার্চ ২০২৫, মঙ্গলবার এটি পুনরায় সচল হয়ে ক্যাম্পাসের চিকিৎসা সেবায় যুক্ত হয়।
অ্যাম্বুলেন্সটি পুনরায় সচল হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যরা উপাচার্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। শিক্ষার্থী সোহেল রানা জনি বলেন, “এতদিন এটি অবহেলায় পড়ে থাকায় আমাদের খুব কষ্ট লাগত। এখন আবার এটি সচল হয়েছে দেখে আমরা অনেক আনন্দিত।”
শিক্ষার্থী তানভীর আহমেদ খান বলেন, “শহীদ জিয়াউর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে শেরে বাংলা হল রাখা হয়েছিল, সেটিও আগের নামে ফিরে এসেছে। উপাচার্য স্যারের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. মোঃ কামাল হোসেন জানান, “অ্যাম্বুলেন্সটির ইঞ্জিন, চাকা, বডি, লাইটসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ মেরামত করা হয়েছে। এটি এখন আগের মতোই কার্যক্ষম।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোঃ ইকতিয়ার উদ্দিন বলেন, “উপাচার্য মহোদয়ের দূরদর্শী নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়টির সার্বিক উন্নয়ন হচ্ছে। পরিত্যক্ত সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, “পবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের কল্যাণে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দেয়া উপহার অ্যাম্বুলেন্সটি পুনরায় চালু করতে পেরে আমি গর্বিত ও আনন্দিত। এটি আমাদের চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”
তিনি আরও বলেন, “একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সম্পদ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হওয়া উচিত নয়। এটি যারা পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রেখেছিলেন, তারা অন্যায় করেছেন। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে এর যথাযথ ব্যবহার হওয়াই উচিত।”
For Advertisement
Unauthorized use of news, image, information, etc published by দৈনিক আমাদের পটুয়াখালী is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.
Comments: