‘ঢাকা লকডাউনে টাকা দিয়েছেন নিক্সন চৌধুরী’

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য দিয়েছেন গ্রেপ্তারকৃত ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ফারুক হোসেন ওরফে বোম ফারুক।
জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল মঙ্গলবার দুপুরে এসব তথ্য জানান।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে ফারুক হোসেনকে আদালতে পাঠায় কোতোয়ালি থানা পুলিশ। এর আগে সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তাকে ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলি এলাকার নুরজাহান টাওয়ারের একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল জানান, সারা বাংলাদেশকে অচল করার লক্ষ্যে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ, মহিলা যুবলীগের কর্মীরা গত ৯ নভেম্বর ফরিদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি মিছিল বের করে। সেই মিছিলটি ফারুক হোসেনের মদদে হয়। বর্তমান সরকারকে উৎখাত, রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরসহ সরকারের বিপক্ষে নানা ধরনের উসকানিমূলক স্লোগান দেওয়া হয় সেই মিছিল থেকে। এরপর বিষয়টি নিয়ে মাঠে নামে পুলিশ।
বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে শহরের ঝিলটুলী এলাকার নুরজাহান টাওয়ারের ১০ তলার এক ফ্ল্যাট থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ফারুক হোসেনকে। এ সময় নাসরিন আক্তার নামের যুব মহিলা লীগের এক নেত্রীকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, আওয়ামী লীগের ডাকা ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচিকে সফল করার জন্য ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক এমপি মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরী তার কাছের মানুষ ফারুক হোসেনকে ৫ লাখ টাকা দিয়েছেন। সেই টাকার মধ্যে ৪ লাখ টাকা ফারুক হোসেন একজন ব্যক্তিকে দিয়েছেন বলে জানান। সেই ব্যক্তিকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে তার নাম প্রকাশ করা হয়নি। এছাড়া ফারুক হোসেন বিভিন্ন সময়ে প্রোগ্রাম করার জন্য বিকাশে তার দলীয় লোকজনকে অর্থ প্রেরণ করেন বলে জানিয়েছেন।
ফারুক হোসেনের নামের সঙ্গে ‘বোম’ শব্দ যোগ হওয়া প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, ১৯৮১ সালে তিনি শহরের টেপাখোলা এলাকায় অবস্থিত ইয়াসিন কলেজের ভিপি ছিলেন। ওই সময়ে ছাত্রদলের ওপর হাতবোমা নিক্ষেপের সময় বোমাটি ফারুক হোসেনের হাতে বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণে তার বাম হাতের একটি আঙ্গুল উড়ে যায়। সেই সময় থেকেই ফারুক হোসেনের নামের সঙ্গে ‘বোম’ শব্দ যোগ হয়ে যায়।
এরপর থেকে তিনি ফরিদপুরে বোম ফারুক নামেই বেশি পরিচিত। ফারুক হোসেনের নামে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থাকায় চারটি এবং রাজধানীর সূত্রাপুর থানায় দুটিসহ মোট ছয়টি মামলা রয়েছে। তিনি জানান, তার সঙ্গে আটক হওয়া নারী মহিলা যুবলীগের সদস্য, তবে আপত্তিকর অবস্থায় পাওয়ার রটনা সত্য নয়।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এ ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা হবে ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে। মামলায় উপপরিদর্শক তরিকুল ইসলাম বাদী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।




আপনার মন্তব্য লিখুন