জমির মালিকানা যাচাই করুন এখনই – সম্পূর্ণ অনলাইন প্রক্রিয়া

বর্তমান সময়ে জমি দেশের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। কিন্তু অনেকেই নিজের নামে থাকা জমি সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানেন না। এজন্য এখন অনলাইনের মাধ্যমে জমির মালিকানা ও খতিয়ান খুঁজে বের করার সুবিধা চালু হয়েছে।
জমির মালিকানা বের করার জন্য প্রথমেই জানতে হবে খতিয়ান বা পর্চা কী। খতিয়ান বলতে বোঝায় সেই সরকারি নথি যা জমির মালিকানা, দাগ নং, জমির পরিমাণ ও সীমানা ইত্যাদি তথ্য ধারণ করে। আইন অনুযায়ী, সরকারি জরিপ শেষে নির্ধারিত ফরমে জমির মালিকানা ও বিবরণ প্রকাশ করা হয়।
জমির খতিয়ানে উল্লেখ থাকে:
* দান নং, মৌজা নং, খতিয়ান নং, বাট্রা নং, এরিয়া নং।
* জমির দখলদার এর নাম, ঠিকানা, পিতার নাম, মাতার নাম ইত্যাদি।
* দখলকা এর জমির অবস্থা, কত শতাংশ জমি এবং জমির সিমানা।
* জমির মালিক এর নাম, ঠিকানা ও পিতার নাম।
* খতিয়ান তৈরি করার সময় খাজনার পরিমাণ ও 28,29,30 বিধি মোতাবেক নির্ধারিত খাজনা উল্লেখ করা থাকে।
* খাজনা বৃদ্ধির কারণ থাকলে তার বিবরণ দেওয়া থাকে।
* ২৬ ধারা মোতাবেক নির্ধার্তি খাজনা।
* নিজস্ব জমি/ভূমি হলে তার বিবরণ।
* এছাড়া, ইজারা কৃত জমির জন্য জমি মালিক এর অধিকার ইত্যাদি উল্লেখ করা থাকে।
বাংলাদেশে চার প্রকার খতিয়ান রয়েছে:
সিএস খতিয়ান – ব্রিটিশ শাসন আমলের খতিয়ান (১৯৪০)
এসএ খতিয়ান – ১৯৫৬-৬০ সালের খতিয়ান
আরএস খতিয়ান – বাংলাদেশের সরকারী উদ্যোগে প্রস্তুত খতিয়ান
বিএস খতিয়ান – ১৯৯৮ থেকে চলমান জরিপের খতিয়ান
অনলাইনে জমির মালিকানা জানতে হলে একটি স্মার্ট ফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন। তারপর ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট (http://www.dlrs.gov.bd/site/view/notices) -এ গিয়ে খতিয়ান তথ্য অনুসন্ধান অপশনে ফরম পূরণ করে নিজস্ব জমি বা দাগ নম্বর অনুসারে তথ্য পাওয়া যায়।
জমির মালিকানা জানার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি প্রতারণা ও জমি সংক্রান্ত ঝামেলা থেকে বাঁচতে সাহায্য করে। এছাড়া, মৃত ব্যক্তির জমি ক্রয় করার আগে ওয়ারিশদের সঙ্গে সম্পর্ক যাচাই করা সম্ভব হয়।
অনলাইনের মাধ্যমে জমির মালিকানা ও খতিয়ান যাচাই করা বর্তমান সময়ে সহজ ও নিরাপদ পদ্ধতি। নাগরিকরা এই সুবিধা ব্যবহার করে নিজের সম্পদের সঠিক তথ্য জানতে এবং জমি ক্রয়-বিক্রয়ে ঝুঁকি এড়াতে পারেন।
আপনার মন্তব্য লিখুন