কুয়াকাটার উপকূল ঘেঁষা ‘শামুক-পণ্যের বাজার’ এখন পর্যটকের আকর্ষণ

কুয়াকাটা থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে কাউয়ারচর এলাকায় গড়ে উঠেছে শামুক-ঝিনুক, কৃত্রিম মুক্তা ও পাথরের তৈরি বাহারি পণ্যের বাজার। সমুদ্র থেকে সংগৃহীত এসব সামগ্রী দিয়ে তৈরি অলংকার ও সাজসজ্জার সামগ্রী পর্যটকদের বিশেষ আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে কুয়াকাটায় ভ্রমণে এসে যারা সূর্যোদয় দেখতে গঙ্গামতি এলাকায় যান, ইচ্ছা করলে তারা সেখান থেকেও কম দামে পছন্দের পণ্যসামগ্রী কিনে নিতে পারেন।

- বিজ্ঞাপন -

শহর ও সৈকত এলাকায় এ ধরনের দোকান রয়েছে দুই শতাধিক। বিক্রেতারা বলছেন, প্রতিদিন গড়ে ২০-২৫ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হয় এসব দোকানে। বৃহস্পতি ও শুক্রবারে এই পরিমাণ আরও বেড়ে যায়।

স্থানীয় বিক্রেতা শাহাবুদ্দিন শিহাব জানান, তার দোকানে শামুক-ঝিনুক দিয়ে তৈরি বিভিন্ন অলংকার ও উপহার সামগ্রী ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে শামুকের মালা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়, পাথরের মালা ১০০ টাকায়, আর কৃত্রিম মুক্তার মালা ৩৫০ টাকায়। এছাড়া শামুকের হাতের বালা ৩০ টাকা, পাথরের ও মুক্তার বালা ৫০ টাকা, কানের দুল ২০ টাকা, মুক্তার চুড়ি ১০০ টাকা এবং শামুক-ঝিনুকের হাতব্যাগ ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চুল বাঁধার জন্য রয়েছে তিন রকমের পণ্য—শামুক কাঠি ৫০ টাকা, শামুকের কাঁকড়া ৬০ টাকা দামে মিলছে। সম্প্রতি দোকানগুলোতে তরুণ-তরুণীদের উৎসাহ নিয়ে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে।

ঢাকা বনানী থেকে আসা এক পর্যটক বলেন, মাত্র ২০০ টাকায় একটা মুক্তার মালা, ৩০ টাকায় ঝিনুকের বালা কিনেছি। আত্মীয়স্বজনদের উপহার দিলে তারা অনেক খুশি হবেন।
খুলনা থেকে আসা এক পর্যটক দম্পতি জানান, আমরা বড় দুটি শামুক কিনে তাতে লিখিয়েছি ‘হ্যাপি ম্যারেজ ডে’। ৭০ টাকা দামের শামুকে নাম লেখাতে পেরে খুব আনন্দিত।

- বিজ্ঞাপন -

বিক্রেতা রাসেল খলিফা বলেন, গ্রামের লোকজন সমুদ্রসৈকত থেকে শামুক-ঝিনুক কুড়িয়ে আনেন। রোদে শুকিয়ে তা মালা তৈরির উপযোগী করে আমাদের কাছে বিক্রি করেন। তবে কৃত্রিম মুক্তা ও পাথর কিনে আনতে হয় চট্টগ্রাম ও ঢাকা শহর থেকে। আসল মুক্তা ও পাথর এখন সহজে পাওয়া যায় না, পাওয়া গেলেও দাম অনেক বেশি।

তিনি আরও জানান, তার দোকানের মাসিক আয় ১ লাখ টাকার মতো। এই টাকায় তিনি ভাইবোনের পড়াশোনা ও পরিবারের খরচ চালান।

কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট এলাকার মার্কেটগুলোতেও রয়েছে প্রায় ২০০টি শামুক-ঝিনুকের দোকান। এসব দোকানে দেশি ও বিদেশি পর্যটকের ব্যাপক ভিড় দেখা যায়।

কুয়াকাটা রাখাইন পল্লী ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিরাজ জানান, আগে সমুদ্রসৈকতে জোয়ারের সময় বিপুল পরিমাণ মরা শামুক-ঝিনুক ভেসে আসত। এখন তা অনেক কমে গেছে। তাই পর্যটকদের চাহিদা পূরণে বিভিন্ন স্থান থেকে এসব পণ্য সংগ্রহ করতে হয়। কৃত্রিম মুক্তা ও পাথর আমদানি করতে হয় বিদেশ থেকেও।

আপনার মন্তব্য লিখুন

- Google -

আরও পড়ুন

Back to top button