৫ই আগস্ট স্পিকারসহ ১২ জন সংসদের গোপন কক্ষে ছিলাম

গত ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু এবং সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ ১২ জন জাতীয় সংসদ ভবনের একটি কক্ষে লুকিয়ে ছিলেন। সংসদ ভবন আক্রান্ত হলেও সেদিন সকাল থেকে রাত আড়াইটা পর্যন্ত সেখানে ছিলেন তারা। পরে  সেনাবাহিনী তাদেরকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। বুধবার গণ-অভ্যুত্থানে আব্দুল জব্বার হত্যা মামলায় রিমান্ড আবেদনের শুনানিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমানের আদালতে পালিয়ে থাকার এই তথ্য দেন জুনায়েদ আহমেদ পলক। গত ৫ই আগস্ট সকাল সোয়া ১০টার দিকে রাজধানীর বাড্ডার ডিআইজি প্রজেক্ট এলাকায় রংমিস্ত্রি আব্দুল জব্বার গুলিতে নিহত হন। ওই হত্যা মামলায় পলককে আসামি করা হয়েছে। পরদিন ৬ই আগস্ট দেশত্যাগের চেষ্টার সময় পলককে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক করা হয়।

- বিজ্ঞাপন -

পলক আদালতকে বলেন, মামলার ঘটনার যে তারিখ ও সময়ের কথা শুনতে পেলাম তার বিষয়ে বলছি। ৫ই আগস্ট সন্ধ্যা বা রাতে মহান জাতীয় সংসদে রাত আড়াইটা পর্যন্ত স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, আমিসহ ১২জন আবদ্ধ ছিলাম।  পরে সেনাবাহিনী আমাদের উদ্ধার করে। আমি সারা দিন সংসদে অবস্থান করেছিলাম, সেখানে ৫ই আগস্ট কোনো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আমার কোনো দায় নেই। তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। আমি ন্যায়বিচার চাই। পলকের বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী। তিনি আদালতকে বলেন, আমরা শুনেছিলাম ৫ই আগস্ট সংসদে স্পিকারসহ বেশক’জন লুকিয়ে ছিলেন। আজ জুনায়েদ আহ্‌মেদ পলক সেই ঘটনা বললেন। এখনো স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। আমরা বারবারই বলছি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতাকে যারা সরাসরি গুলি করে হত্যা করেছে, তাদের যে শাস্তি, একই শাস্তি, যারা এসব হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। জুনায়েদ আহ্‌মেদ পলক এসব হত্যাকাণ্ডের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত। আন্দোলনের সময় যে পাঁচজন আন্দোলন দমাতে বক্তব্য রাখতেন তাদের একজন পলক। নেট বন্ধ করে হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করেছেন। তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বললে হাস্যকর মনে হবে। যিনি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন এবং যিনি সহযোগিতা করেছেন সমান অপরাধী। আদালত উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে জুনায়েদ আহ্‌?মেদ পলককে এই মামলায় তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট তীব্র গণ-আন্দোলনের মুখে যখন খবর আসে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। তখন বাঁধভাঙা উল্লাসে ফেটে পড়েন লাখো ছাত্র-জনতা। দেয়াল ভেঙে ঢুকে পড়েন গণভবনে। হাজার হাজার মানুষ দখলে নেয় সংসদ ভবন এলাকা। ভেতরে ঢুকে পড়েন ছাত্র-জনতা।  পরিস্থিতি যখন এমন তখনও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভেতরে অবস্থান করছিলেন জুনায়েদ আহমেদ পলক, শিরীন শারমিন চৌধুরীসহ অন্তত ১২জন। পরে সেনাবাহিনী তাদেরকে উদ্ধার করে নিরাপদে নিয়ে যায়।

- বিজ্ঞাপন -

আপনার মন্তব্য লিখুন

- Google -

আরও পড়ুন

Back to top button