৪ দিন সাগরে ভেসে বেঁচে ফিরলেন ৯ জেলে, নিখোঁজ এখনো ৩ জন

বঙ্গোপসাগরের উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে টানা চারদিন লড়াই করে প্রাণে ফিরেছেন বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার ৯ জেলে। তবে এখনও খোঁজ মেলেনি বাকি ৩ জনের। গত ৫ জুলাই গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ে ‘এফবি সাইকূল’ নামের একটি ট্রলার। ৬ জুলাই সকালে পায়রা বন্দরের শেষ বয়ার কাছে প্রবল ঢেউয়ের ধাক্কায় ট্রলারটি ডুবে যায়।
জানা গেছে, ট্রলারটিতে মোট ১২ জন জেলে ছিলেন। ট্রলার ডুবির পর থেকে সবাই নিখোঁজ হন। এরপর ১০ জুলাই বৃহস্পতিবার সকালে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর সোনারচর উপকূলে ভেসে থাকা অবস্থায় ৯ জেলেকে উদ্ধার করে একটি মাছ ধরার ট্রলার। পরে তাদের হস্তান্তর করা হয় রাঙ্গাবালী নৌপুলিশের কাছে।
উদ্ধার হওয়া জেলেরা হলেন–
রাসেল (২৪), জাহিদ (২৭), মুনসুর (২৮), আল আমিন সিকদার (২৮), এবাদত (৩৬), ইব্রাহিম খান (৪০), নূরুল হক (৪৫), কবির হোসেন (৫২) ও শাহ আলম (৬২)। তারা সকলেই বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার বাসিন্দা।
জেলেদের মাঝি কবির হোসেন বলেন, “৬ জুলাই ভোরে ট্রলার উলটে গেলে আমরা সবাই রিং বয়া ও ফ্লোট ধরে সাগরে ভেসে থাকি। কিন্তু প্রচণ্ড ঢেউয়ের কারণে তিনজন আমাদের কাছ থেকে ছিটকে যায়। আমরা ৯ জন একসঙ্গে থাকার চেষ্টা করি এবং শেষ পর্যন্ত সোনারচরের কাছে ভেসে আসি।”
এই চারদিন তারা কোনো খাবার, বিশ্রাম ও বিশুদ্ধ পানি ছাড়াই সমুদ্রে ভাসমান ছিলেন। জীবিত উদ্ধার হওয়া জেলেরা জানান, তারা সামান্য লবণাক্ত পানি পান করে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন।
নিখোঁজ তিন জেলে হলেন– খবির আলী মিয়া, গোপাল মিস্ত্রী ও সোহাগ। তাদের নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। ট্রলার মালিকের ভাই পরিচয়ে একজন দাবি করেছেন, নিখোঁজ তিনজনকেও নাকি পাওয়া গেছে। তবে এ ব্যাপারে নিশ্চিত কোনো তথ্য জানায়নি নৌপুলিশ।
রাঙ্গাবালী নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শহীদুল ইসলাম জানান, “উদ্ধারকৃতদের চরমোন্তাজে এনে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নিখোঁজদের খোঁজে তৎপরতা চলছে। কেউ কেউ বলছে তিনজনকেও নাকি পাওয়া গেছে, তবে আমরা এখনো নিশ্চিত নই।”
আপনার মন্তব্য লিখুন