সপ্তাহে একদিন ছুটির দাবি ব্যবসায়ী কর্মচারীদের

পটুয়াখালীর গলাচিপা পৌরসভার সদররোড এলাকার বিভিন্ন গার্মেন্টসের দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীরা সাপ্তাহিক একদিন ছুটির দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসকের নিকট লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে গলাচিপা সদরের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে এ আবেদনপত্র জমা দেন।
কর্মচারীরা অভিযোগ করেন, শ্রম আইন লঙ্ঘন করে সপ্তাহে সাত দিন দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখছেন মালিকরা। ফলে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়, কিন্তু সপ্তাহে একদিনও বিশ্রামের সুযোগ নেই। এতে তারা দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন।
লিখিত আবেদনপত্রে বলা হয়, দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো গলাচিপা বাজারেও সপ্তাহে অন্তত একদিন ছুটি নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এতে কর্মচারীরা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে ও বিশ্রাম নিতে পারবেন, যা তাদের কর্মক্ষমতা ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
কর্মচারীদের পক্ষ থেকে আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেন মো. সোহেল রানা। তিনি বলেন,আমাদের আইনগত অধিকার সপ্তাহে ১ দিন ছুটি, যা আগে কার্যকর ছিল। প্রতি শুক্রবার দোকান বন্ধ থাকত। কিন্তু প্রায় এক বছর ধরে সেই নিয়ম আর মানা হচ্ছে না। সপ্তাহে ৭ দিন দোকান খোলা থাকে। আমরা ইউএনও স্যারের কাছে আবেদন দিয়েছি এতে ৬৮ জন কর্মচারী স্বাক্ষর দিয়ে সমর্থন জানিয়েছেন। আশা করছি প্রশাসন বিষয়টি দেখবেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা সাপ্তাহিক একদিন ছুটির পক্ষে। কিন্তু কিছু ব্যবসায়ী নিয়ম মানেন না, তারা দোকান খোলা রাখেন। ফলে অনেক ব্যবসায়ী এতে অসন্তুষ্ট।
দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তাপস দত্ত বলেন, শ্রম আইন অনুযায়ী কর্মচারীদের সপ্তাহে একদিন ছুটি পাওয়ার অধিকার রয়েছে। আগে শুক্রবার ছুটি কার্যকর ছিল, কিন্তু প্রায় দুই বছর ধরে অনেকে সেই নিয়ম মানছেন না। কিছু দোকান বন্ধ রাখলেও অনেকেই খোলা রাখছেন, ফলে সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে না। আমরা মালিক সমিতি বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মাহামুদুল হাসান বলেন,কর্মচারীরা একটি লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন। আমি মালিক সমিতিকে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে সাপ্তাহিক ছুটি নির্ধারণের সিদ্ধান্ত জানাতে বলেছি। যদি কেউ আইন অমান্য করে নিয়ম না মানে, তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) অনুযায়ী প্রতিটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীর প্রতি সপ্তাহে অন্তত একদিনের বিশ্রামের অধিকার রয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ দোকান ও প্রতিষ্ঠান আইন, ২০১৮ অনুযায়ী, প্রতিটি দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সপ্তাহে অন্তত একদিন সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের ঐ দিন বিশ্রাম ও ছুটি ভোগের সুযোগ দিতে হবে।
আপনার মন্তব্য লিখুন