ব্যবসায়ীকে মারধর ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ, কলাপাড়ায় শ্রমিক দল নেতা গ্রেপ্তার

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় এক মৎস্য ব্যবসায়ীকে মারধর, ছিনতাই এবং বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের অভিযোগে লতাচাপলী ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মামুন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৯ এপ্রিল) রাতে মামুন মোল্লাকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নির্যাতনের ঘটনাটি ঘটে গত ১৬ মার্চ, কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর থানার আওতাধীন আলীপুর বাজার সংলগ্ন থ্রি পয়েন্ট এলাকায়। ভুক্তভোগী মো. মশিউর রহমান এই ঘটনায় মহিপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বাউফল উপজেলার বাসিন্দা মশিউর রহমান পেশায় একজন মৎস্য ব্যবসায়ী এবং ব্যবসায়িক কাজে আলীপুরে অবস্থান করতেন। ঘটনার দিন দুপুরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বের হলে থ্রি পয়েন্ট এলাকায় কয়েকজন ব্যক্তি তাঁকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। পরে তাঁকে হাত-পা বেঁধে আলীপুর টোলপ্লাজার পাশে একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে ৫-৭ জনের একটি দল তাঁকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। তাঁর কাছে থাকা ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা, একটি এটিএম কার্ড (যেখান থেকে পরবর্তীতে ২০ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়) এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাঁর আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা আদায় করা হয়। অভিযোগে আরও বলা হয়, নির্যাতনের একপর্যায়ে তাঁকে বিবস্ত্র করে ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয় এবং তা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। পরে সেই ভিডিও কলের মাধ্যমে অন্য নারীদের দেখানো হয়।
ভুক্তভোগী মশিউর রহমান বলেন, “আমাকে যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, এখনও শরীরে আঘাতের চিহ্ন বয়ে বেড়াচ্ছি। আমাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করা হয়েছে, যা এখন আমার সামাজিক নিরাপত্তা এবং মান-সম্মানের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
এ বিষয়ে লতাচাপলী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মহিউদ্দিন মুসুল্লি সুলতান বলেন, “একজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে এমন আচরণ সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত। এটি দলের নীতির পরিপন্থী। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখছি এবং দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, “ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে মামুন মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
##
সিকদার জাবির হোসেন, পটুয়াখালী
আপনার মন্তব্য লিখুন