বাউফল হাসপাতালে রোগীর সেলাই-ব্যান্ডেজ করছেন বাগানের মালি!

 

- বিজ্ঞাপন -

আসাদুল্লাহ হাসান মুসা, রিপোর্টার: পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘটেছে এক চমকপ্রদ ও উদ্বেগজনক ঘটনা। এখানে একজন ‘বাগানের মালি কাম হারবাল সহকারী’ দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগীর সেলাই, ব্যান্ডেজ ও ইনজেকশন পুশ করার মতো গুরুতর চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। অথচ তার প্রকৃত দায়িত্ব ছিল হাসপাতালের বাগান পরিচর্যা ও হারবাল চিকিৎসায় সহায়তা করা। কিন্তু সেই হাসপাতালে নেই কোনো বাগান, চালু নেই হারবাল চিকিৎসাও।

অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন মো. সবুজ নামে একজন কর্মচারী, যিনি দীর্ঘ সময় ধরে এ হাসপাতালে কর্মরত আছেন। তার বিরুদ্ধে রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।

রোগীর স্বজনদের ভাষ্যমতে, হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী না থাকায় সবুজকে বসানো হয়েছে জরুরি বিভাগে। সেখানে তিনি রোগীর ক্ষত সেলাই, ব্যান্ডেজ পরিবর্তন ও ইনজেকশন দেওয়ার কাজ করে চলেছেন। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, তার এ অনভিজ্ঞ চিকিৎসার কারণে রোগীর ক্ষতস্থানে ইনফেকশন হচ্ছে।

একজন রোগীর স্বামী রাসেদুল ইসলাম বলেন, “সম্প্রতি আমার স্ত্রীর অপারেশন হয়। তার ড্রেসিং করানোর জন্য বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। সবুজ নামের ওই লোক জরুরি বিভাগে ছিল, সে ড্রেসিং করে দেয়। পরে ইনফেকশন হয়ে যায়।”

- বিজ্ঞাপন -

একজন বেসরকারি চিকিৎসক বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, “একজন বাগান মালির মাধ্যমে রোগীর সেলাই-ব্যান্ডেজ করানো স্বাস্থ্যসেবার জন্য খুবই ভয়াবহ। এতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এতে রোগীর জীবন হুমকিতে পড়তে পারে।”

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মো. সবুজ বলেন, “জরুরি বিভাগে আমার কোনো ডিউটি নেই। কিন্তু আমাদের এখানে ইউনানী আয়ুর্বেদী চিকিৎসক নেই। তাই কর্তৃপক্ষ যেখানে ইচ্ছা, সেখানে আমাকে কাজ দিতে পারে। আমি জোর করে কারো কাছ থেকে টাকা নিই না, কেউ দিলে নিই।”

এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুর রউফ বলেন, “আমার এখানে জরুরি বিভাগে পর্যাপ্ত ডাক্তার নেই। এমনকি যে পরিমাণ মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট থাকা দরকার, সেটাও নেই। তাই লোকবল সংকটের কারণে সবুজকে চিকিৎসকের সহকারী হিসেবে কাজে লাগানো হচ্ছে।”

পটুয়াখালী জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ খালেদুর রহমান মিয়া বলেন, “চিকিৎসক সংকটের কারণেই এমনটি হয়েছে, যা মোটেও উচিত নয়। এ সংকট নিরসনে আমরা চেষ্টা করছি। চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ পেলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”

আপনার মন্তব্য লিখুন

- Google -

আরও পড়ুন

Back to top button