বাউফল আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করবেন এনসিপি’র কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন

পটুয়াখালী-২ বাউফল আসন থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ থেকে ২০০৮ সালে এলএলবি (অনার্স) এবং ২০০৯ সালে এলএলএম পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যয়নকালীন সময়ে তিনি সর্বদলীয় বাউফল উপজেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
পড়াশোনা শেষে করেই তিনি আইন পেশায় নিয়োজিত হন এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে ১০ বছরের অধিককাল প্র্যাকটিস অব্যাহত রেখেছেন।
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তিনি বাউফল উপজেলার বিএনপি এবং জামায়াতের নির্যাতিত অনেক নেতাকর্মীর মামলা পরিচালনা করেন। বাউফল উপজেলা সাধারণ মানুষের কাছে তিনি একজন ভালো আইনজীবী হিসেবে পরিচিত।
ছোটবেলা থেকেই তিনি রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠেন। তার পিতা মাওলানা ইসহাক মিয়া বর্তমানে জামায়াতের বাউফল উপজেলা আমির এবং তার মামারা বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। তার এক মামা জাতীয় পার্টি থেকে বাউফল সংসদীয় আসনে এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন।
ছাত্রজীবনে তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রজীবন শেষে দীর্ঘদিন কোনো রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পরে এনসিপি’র প্রতিষ্ঠালগ্নে তিনি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে আবার রাজনীতি শুরু করেন।
রাজনীতির পাশাপাশি তিনি শিক্ষানুরাগী হিসেবে বাউফলে বিশেষ পরিচিত। বাউফল উপজেলার একমাত্র মহিলা ডিগ্রি কলেজের সভাপতি হিসেবেও তিনি বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন।
বাউফলের শিক্ষা, সামাজিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে তিনি যথেষ্ট ভূমিকা রাখছেন। তার সহযোগিতায় বাউফলের অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে এবং তাদের মধ্যে অনেকেই এখন পদস্থ সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে নিয়োজিত আছেন।
বাউফলের দীর্ঘদিনের সমস্যা বগা সেতু বাস্তবায়নের জন্য তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন এবং বগা সেতু বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তাছাড়াও বাউফলের বেকারত্ব দূরীকরণের জন্য বাউফল সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রতিষ্ঠায় তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। মন্ত্রণালয় কর্তৃক এই টেকনিক্যাল স্কুল অনুমোদনের কার্যক্রম একদম শেষের দিকে।
মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন একজন সৎ, দক্ষ এবং পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে বাউফলবাসীর নিকট পরিচিত। গত ১৪ই জুলাই ’২৪ তারিখে পটুয়াখালীর পদযাত্রায় এনসিপি দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ পটুয়াখালীবাসীর নিকট হাত উঁচিয়ে তাকে পরিচয় করিয়ে দেন। সুতরাং এটা বলা যেতে পারে যে, বাউফল উপজেলার সংসদীয় আসনে আগামী সংসদ নির্বাচনে এনসিপি থেকে প্রার্থী হচ্ছেন পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন।
এ ব্যাপারে এনসিপি’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন বলেন, “আমি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে দীর্ঘদিন আইন পেশায় কাজ করার পাশাপাশি বাউফলের সাধারণ মানুষের পাশে থেকেছি। আমার রাজনীতির লক্ষ্য কখনোই ব্যক্তিস্বার্থ নয়, বরং শিক্ষা, উন্নয়ন ও সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। আমি জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে কাজ করছি। আমাদের দল যদি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে এবং আমাকে যদি মনোনয়ন প্রদান করে, তাহলে আমি আমার জন্মভূমি পটুয়াখালী-২, বাউফল আসন থেকে প্রার্থী হবো।
বাউফলবাসীর দুঃখ-দুর্দশা আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। এখানকার শিক্ষা, বেকারত্ব, অবকাঠামো ও স্বাস্থ্যখাতের নানা সীমাবদ্ধতা আমার জানা আছে। আমি বিশ্বাস করি, সুযোগ পেলে এসব সমস্যার সমাধানে আমি যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারবো। বাউফলের দীর্ঘদিনের দাবি বগা সেতু বাস্তবায়নের জন্য আমি ইতোমধ্যে নেতৃত্ব দিচ্ছি। পাশাপাশি বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপনের কাজও প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে এসেছি।
আমার জীবনের প্রতিটি ধাপেই আমি মানুষের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। ছোটবেলা থেকে রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠায় রাজনীতি আমার কাছে শুধু ক্ষমতা অর্জনের হাতিয়ার নয়, বরং সেবা ও দায়িত্ব পালনের মাধ্যম। সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ করার সময়ও আমি বিএনপি ও জামায়াতসহ নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি, আইনি সহায়তা দিয়েছি।
আমার স্বপ্ন একটি শিক্ষিত, দক্ষ, কর্মসংস্থানমুখী এবং আধুনিক বাউফল গড়ে তোলা। আমি চাই, এখানকার তরুণরা শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করুক, সরকারি-বেসরকারি চাকরিতে নিয়োজিত হোক। আমি চাই, এখানকার কৃষক, জেলে, শ্রমজীবী মানুষ তাদের ন্যায্য অধিকার পাক।
আমি বিশ্বাস করি, আমার দল ও জনগণ আমাকে আস্থা রাখলে আমি বাউফলকে একটি সমৃদ্ধ, আধুনিক ও উন্নত উপজেলায় রূপান্তর করতে পারব।”
আপনার মন্তব্য লিখুন