বঙ্গোপসাগরের সাড়ে ৪ কেজির কালো পোয়া ৭২ হাজারে বিক্রি

কুয়াকাটা প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর আলিপুর মৎস্য বন্দরে বিরল প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ কালো পোয়া বিক্রি হয়েছে ৭২ হাজার টাকায়। প্রায় ৪ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের এ মাছটির প্রতি কেজির দাম ধরা হয় ১৬ হাজার টাকা।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে মাছটি বন্দরে উঠতেই খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সচরাচর জেলেদের জালে এ ধরনের মাছ ধরা না পড়ায় কৌতূহলী মানুষজন মাছটি একনজর দেখতে ভিড় জমায়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মাছটি মনিফিসি আড়তে ওঠার পর ডাকের মাধ্যমে ‘ফ্রেশ ফিস কুয়াকাটা’র স্বত্বাধিকারী মুসা কিনে নেন। তিনি জানান, মাছটি কিছুটা নরম হয়ে যাওয়ায় আশানুরূপ দাম পাওয়া যায়নি। তবে এটি তিনি রপ্তানির জন্য প্রস্তুত করবেন। স্থানীয়ভাবে মাছটিকে ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’ নামে ডাকা হয়। এর বায়ু থলি বা এয়ার ব্লাডার আন্তর্জাতিক বাজারে বিশেষ করে চীনে ওষুধ ও প্রসাধনী তৈরিতে ব্যবহৃত হয় বলে এ মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
ওয়াল্ড ফিস বাংলাদেশের গবেষণা সহকারী বকতিয়ার উদ্দিনের মতে, কালো পোয়া (Protonibea diacanthus) হলো Sciaenidae পরিবারের একটি বিরল মাছ। সাধারণত এদের দৈর্ঘ্য ৫০ থেকে ১৮০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়, কখনও আবার দেড় মিটার ছাড়িয়ে যায়। গড়ে ওজন ১০ থেকে ২৫ কেজি হলেও ৫০ কেজিরও বেশি ওজনের নমুনাও ধরা পড়েছে। এরা কাদামাটি বা বালুময় সমুদ্রতলে বাস করে এবং ছোট মাছ, চিংড়ি ও বিভিন্ন ক্রাস্টেশিয়ান খেয়ে বেঁচে থাকে।
তিনি আরও জানান, বঙ্গোপসাগরের কক্সবাজার, মহেশখালী, সেন্ট মার্টিন, পটুয়াখালী ও বরিশাল উপকূলজুড়ে এ মাছ পাওয়া যায়।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, এ মাছকে ব্ল্যাক স্পটেড ক্রোকারও বলা হয়। এর এয়ার ব্লাডারই আন্তর্জাতিক বাজারে সবচেয়ে দামী অংশ। বাংলাদেশে সচরাচর এ মাছ ধরা পড়ে না, তবে সুন্দরবন এলাকায় কিছুটা পাওয়া যায়। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২৫ কেজি ওজনের কালো পোয়া ধরা পড়েছে বলে রেকর্ড রয়েছে। সম্প্রতি ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ার পর জেলেদের জালে নানা প্রজাতির মাছ বেশি ধরা পড়ছে, এতে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
আপনার মন্তব্য লিখুন