দুই ছাত্রদল নেতার শাস্তিতে তৃণমূলে ক্ষোভ, পুনঃবিবেচনার দাবী

স্টাফ রিপোর্টার :

- বিজ্ঞাপন -

পটুয়াখালীতে এক কিশোরের ওপর হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ পটুয়াখালী জেলা শাখার তিন নেতাকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কার করেছে।

বহিষ্কৃত নেতারা হলেন, আব্দুল করিম মৃধা কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি আরিফ বিল্লাহ, পলিটেকনিক কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক অমি প্যাদা, পটুয়াখালী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসান রাকিব।

একই সঙ্গে, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান শামীম, সদস্য সচিব জাকারিয়া আহমেদ ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আল-আমিন হাওলাদারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়। তাদের আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতির কাছে লিখিত জবাব জমা দিতে বলা হয়েছে।

বহিষ্কৃত নেতাদের মধ্যে পটুয়াখালী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসান রাকিব বলেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের উপর শ্রদ্ধা রেখে আমি মেনে নিয়েছি। তবে আমি ছাত্রদলের সঙ্গে আছি এবং থাকবো। এই আদর্শ থেকে বিন্দু মাত্র বিচ্যুতি সৃষ্টির করবো না। দল ও সাধারণ ছাত্রদের কল্যাণে কাজ করবো। দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রতি সিদ্ধান্ত পুনঃ বিবেচনার জোড় অনুরোধ করছি।

- বিজ্ঞাপন -

তবে এ সিদ্ধান্তে তৃণমূল ছাত্রদল ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তাদের অভিযোগ, মেহেদী হাসান রাকিব ও আরিফ বিল্লাহ এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না, বরং ঘটনার সময় রাকিব ঘটনাস্থল থেকে এক কিলোমিটার দূরে পটুয়াখালী সরকারি কলেজের সামনে সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ত ছিলেন এবং আরিফ বিল্লাহ সোনালী ব্যাংক মোড়ে একজন গোয়েন্দা শাখার সদস্যদের সঙ্গে চায়ের আড্ডায় ছিলেন। এই তথ্য পৌরসভার সিসিটিভি ফুটেজেও স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান বলে দাবি করেছেন তারা।

তাদের দাবি অনুযায়ী, শহরের বনানী এলাকায় ৯টা ৩ মিনিটের সময় কয়েকজন যুবক এক কিশোরকে অটো থেকে নামিয়ে মারধর করছিল। একই সময়ে, মেহেদী হাসান রাকিব পটুয়াখালী সরকারি কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে একজনের সঙ্গে কথা বলছিলেন, যা হামলার স্থান থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে।  মেহেদী হাসান রাকিব দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ছাত্রদলের হয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। দফায় দফায় হামলা ও মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি জেলার ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ করতে এবং ছাত্রদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছিলেন।

এছাড়া, তিনি কিছুদিন আগে এক দুর্ঘটনার শিকার হন এবং দীর্ঘদিন ধরে হাত ব্যান্ডেজ নিয়ে চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে ছিলেন। এত কিছুর পরেও তাকে কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই বহিষ্কার করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করছে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

ছাত্রদল কর্মী সাইয়েদ আরাফ বলেন, “মেহেদী হাসান রাকিব সম্পূর্ণ নির্দোষ। তার বিরুদ্ধে নেওয়া সিদ্ধান্ত সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রত্যাহার করতে হবে। এভাবে ত্যাগী কর্মীদের দল থেকে দূরে সরিয়ে দিলে নতুন প্রজন্ম রাজনীতি থেকে আগ্রহ হারাবে।  দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত ও শহরে সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা সাপেক্ষে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে মেহেদী হাসান রাকিব ও আরিফ বিল্লাহকে স্বপদে দলে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব জাকারিয়া আহমেদ বলেন, বহিস্কৃতরা কোন ধরনের হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়। তারা ছাত্রদলের নিবেদিত কর্মী। তাদের বিরুদ্ধে কোন মহল ষড়যন্ত্র করেছে। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের কাছে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি নিশ্চিতের জন্য অনুরোধ করছি।

তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জানান, প্রাথমিক তথ্য উপাত্ত পর্যালোচনা করে কেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অধিকতর তদন্ত ও অনুসন্ধানের পরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে। আমাদের টিম কাজ করছেন, কেউ বিনাদোষে শাস্তি পাবে না। আমরা বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখবে।

তিনি আরও বলেন, যারা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে থাকবে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।

এদিকে, বহিষ্কৃত নেতাদের পক্ষে ইতোমধ্যে ছাত্রদলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা সোচ্চার হয়েছেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাদের বহিষ্কারের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

- Google -

আরও পড়ুন

Back to top button