থামছেনা চেয়ারম্যান পরিবহনের বেপরোয়া গতি, আতঙ্কে পথচারীরা

পটুয়াখালী-দুমকি- বাউফল-দশমিনা আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে চেয়ারম্যান পরিবহনের যাত্রীবাহী বাস। বেপরোয়া গতি, অপ্রশিক্ষিত ড্রাইভার, প্রতিযোগিতাপূর্ণ চালনাই দূর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে মনে করছেন সচেতনমহল। ঢাকা – দুমকি – বাউফল রুটে সাকুরা, চেয়ারম্যান, কিংস,মুন, অন্তরা,বাউফল ট্রাভেলস পরিবহনের বাসগুলো চলাচল করলেও গত তিন মাসে শুধু দুমকিতেই অন্তত ৫/৬টি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে চেয়ারম্যান পরিবহনের বাস। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে কিংস পরিবহন। দুমকি থানা ব্রীজ এলাকায় একাধিকবার বাসের চালকদের এসব অভিযোগে সতর্ক করেছেন স্থানীয়রা। দু’ একদিন পর পূণরায় বেপরোয়া গতিতে চলছে বাসগুলো। বর্তমানে চেয়ারম্যান পরিবহন মানেই দুমকিবাসীর আতঙ্ক। বুধবার রাত নয়টার দিকে চেয়ারম্যান পরিবহনের একটি বাস রাজাখালী এলাকায় বেপরোয়া গতিতে একটি অটোগাড়ীকে ধাক্কা দিলে যাত্রীসহ অটোটি উল্টে খাঁদে পড়ে তিনজন গুরুতর আহত হন। আহতরা হলেন, মুরাদিয়া এলাকার ফাহাদ মেহেদী, আজিজ আহম্মেদ কলেজের ছাত্রদল সভাপতি মমিন মৃধা ও শিক্ষার্থী তাজ। আহতরা বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
উক্ত পরিবহনটি বন্ধের দাবিতে পাশ্ববর্তী বাউফলেও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা গত ২৫ আগষ্ট ডাঃ ইয়াকুব শরীফ কলেজের সামনে সড়কে মানববন্ধন করে পরিবহনটি বন্ধের দাবিও জানিয়েছিল যা সমকালসহ একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এর পরেও টনক নড়েনি বাস কতৃপক্ষের। দুমকি- বাউফল আঞ্চলিক মহাসড়কে যতগুলো দূর্ঘটনা ঘটেছে তাঁর সিংহভাগই ঘটিয়েছে চেয়ারম্যান পরিবহনের বাসগুলো। সরু আঞ্চলিক সড়কে বেপরোয়া গতিতে বাস চালানো বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বুধবার রাতে দূর্ঘটনার শিকার ফাহাদ মেহেদি নামের এক যুবক। তিনি জানান, বেপরোয়া গতিতে বাসটি তাদের অটোরিকশাকে পেছনদিক থেকে ধাক্কা দিলে গাড়িটি উল্টে রাস্তাপাশ্ববর্তী খাদে পড়ে যায়, এতে ওই গাড়িতে থাকা তিনজনই গুরুতর আহত হন।
বোর্ড অফিস বাজারের ব্যবসায়ী শ্রীকান্ত দাস,তালতলি বাজারের চা দোকানী হিরা হাওলাদার,রাজাখালী বাজারের পারভেজ, দুমকি থানাব্রীজ এলাকার জলিলুর রহমান, দুমকি নতুন বাজারের ব্যবসায়ী হারুন অর রশিদ, দুমকি একে মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও সৃজনী বিদ্যানিকেতনের শিক্ষার্থীসহ অনেকেই চেয়ারম্যান পরিবহনের বাসগুলো বন্ধ করার দাবি জানান।
এই রুটে চলাচলকারী চেয়ারম্যান পরিবহন জনসাধারণের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে। বার বার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে তাদের বাস। এতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কার্যকর কোনো আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পদ্মাসেতু নির্মাণের পরে বেশিরভাগ মানুষই সড়কপথে যাতায়াত করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চেয়ারম্যান পরিবহনের মালিক দশমিনা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ইকবাল মাহমুদ লিটন।আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনিও এলাকা ছেড়েছেন। তাৃর মোবাইল বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি।
দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মো. জাকির হোসেনের ভাষ্য, বেপরোয়া গতিসম্পন্ন চেয়ারম্যান পরিবহনের দুর্ঘটনার বিষয়টি শুনে আসছেন। তবে কেউ অভিযোগ দেননি। পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ এবিষয়ে নজর দিলে দূর্ঘটনা অনেকটা কমে আসবে।
আপনার মন্তব্য লিখুন