তিতকাটা মাদ্রাসার সাবেক সভাপতির বিরুদ্ধে জাল সনদের অভিযোগ

পটুয়াখালী সদর উপজেলার বড় বিঘাই ইউনিয়নের তিতকাটা গ্রামের মোশারফ মোল্লার ছেলে রিপন (৪৩) এর বিরুদ্ধে জাল সনদ ব্যবহার করে মাদ্রাসার সভাপতি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তিনি পেশায় এনজিও কর্মকর্তা এবং বর্তমানে গ্রামীণ সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জাল সনদে সভাপতির পদ
২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত রিপন তিতকাটা ডি এস আলিম মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আবেদনপত্রে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা মাস্টার্স পাশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সেই তথ্যের ভিত্তিতে মাদ্রাসা বোর্ড তাকে সভাপতি পদে অনুমোদন দেয়। পরবর্তীতে অনুসন্ধানে জানা যায়, রিপনের জমাকৃত মাস্টার্স সনদটি জাল।
ইউজিসির প্রতিবেদন
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র যাচাইয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনে (ইউজিসি) আবেদন করে। গত ১৪ আগস্ট ইউজিসির পরিচালক ড. মো. সুলতান মাহমুদ ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে জানানো হয়—বাংলাদেশে “সাউথ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ” নামে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই, এমনকি প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাতেও নেই। ফলে রিপনের সার্টিফিকেট ভুয়া বলে প্রতীয়মান হয়।
গুগল সার্চে ওই নামে একটি ওয়েবসাইট (http://www.southwesternuniversity.org/) পাওয়া গেলেও সেটি বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদর্শন করছে বলে ইউজিসি চিঠিতে উল্লেখ করে। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়। পাশাপাশি বিভ্রান্তিকর ওয়েবসাইটটি বন্ধের জন্য বিটিআরসিকে অবহিত করা হয়।
সভাপতির পদ হারানো ও আইনি জটিলতা
অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড রিপনকে সভাপতি পদ থেকে বাদ দেয় এবং এ কে এম আসাদুজ্জামানকে সভাপতি করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে। তবে রিপন তার পদ ফিরে পেতে আদালতে রিট করেন। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন এবং আদালত ছয় সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রশাসনের দায়িত্বে মাদ্রাসা
সভাপতি পদ নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় শিক্ষা বোর্ড মাদ্রাসার সব ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) হাতে অর্পণ করেছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক কার্যক্রম ইউএনও’র তত্ত্বাবধানে চলছে।
আপনার মন্তব্য লিখুন