চার মাস পর চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার চার আসামি গ্রেফতার

পটুয়াখালী সদর থানাধীন বড় আউলিয়াপুর ইউনিয়নের আলমগীর তালুকদারকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় চলতি বছরের ৭ এপ্রিল। নিহত আলমগীর তালুকদারের হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা, চোখ-মুখ গামছা দিয়ে মোড়ানো এবং অর্ধগলিত লাশ তালাবদ্ধ নিজ বাসায় ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

- বিজ্ঞাপন -

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মোসাঃ আমেনা বেগম বাদী হয়ে পটুয়াখালী সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যার নম্বর-১৬, তারিখ: ১২-০৪-২৫। ঘটনার পরপরই জেলা পুলিশের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য পটুয়াখালী জেলা পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে।

যৌথ অভিযানে বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত সংগ্রহ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় গত ২৭ জুলাই রাত সাড়ে ৮টায় ঢাকার মতিঝিল এলাকা থেকে মোঃ শাহিন সিকদার (৪৩) নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যে ভিত্তিতে পটুয়াখালী সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অপর তিন আসামিকেও গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন—মোঃ জাফর জোমাদ্দার (৬১), মোঃ রুহুল আমীন খান (৪৮), এবং মোঃ রিপন মিয়া ওরফে রিপন শরীফ (৪২)। এরা সবাই বড় আউলিয়াপুর এলাকার বাসিন্দা।

হত্যার কাজে ব্যবহৃত আলামত হিসেবে উদ্ধার করা হয় রশি, গামছা ও বালিশ। মঙ্গলবার রাতে জেলা পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

পুলিশ জানায়, আলমগীর হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিরা ‘ম্যাগনেটিক পিলার/পাওয়ার কয়েন’ নামক প্রতারণামূলক ও অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। অবৈধ ব্যবসার অর্থ ভাগাভাগি নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। পরে তারা আলমগীরের কাছে টাকা দাবি করে। আলমগীর টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়।

- বিজ্ঞাপন -

পরিকল্পনা অনুযায়ী, গত ৭ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে তারা আলমগীরের বাড়িতে যায়। সেখানে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তারা সকলে মিলে আলমগীরের হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধে, চোখ-মুখ গামছা দিয়ে মোড়ায় এবং বালিশচাপা দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে মরদেহ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে তারা পালিয়ে যায়।

ঘটনায় গ্রেফতারকৃত আসামি শাহিন সিকদার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে আলমগীর তালুকদারকে হত্যার দায় স্বীকার করে।

উল্লেখ্য, ভিকটিম আলমগীরের স্ত্রী মোসাঃ আমেনা বেগম ৭ এপ্রিল রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টায় মোবাইল ফোনে আলমগীরের সঙ্গে সর্বশেষ কথা বলেন। এরপর থেকে আলমগীরের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি।

পরে ১২ এপ্রিল সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭টায় মোসাঃ আমেনা বেগম ও তাঁর ছেলে মোঃ রিয়াজ তালুকদার বড় আউলিয়াপুরের বাসায় গিয়ে ঘরের দরজা তালাবদ্ধ দেখতে পান। কিন্তু ঘরের ভেতর থেকে পচা গন্ধ আসছিল। তালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে তারা দেখতে পান, মৃতদেহের হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা এবং মুখ গামছা দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

- Google -

আরও পড়ুন

Back to top button