গলাচিপায় ইমাম মাহদী দাবি করায় মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার

পটুয়াখালীর গলাচিপায় নিজেকে ‘ইমাম মাহদী’ দাবি করায় এক মাদ্রাসাশিক্ষককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গলাচিপা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে থেকে উত্তেজিত জনতা তাঁকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে তার বিরুদ্ধে মামলা হলে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির নাম মো. হাবিবুর রহমান (৩৭)। তিনি কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার পশ্চিম শাহপুর গ্রামের মো. আমানত উল্লাহর ছেলে এবং গলাচিপা উপজেলার বাহের গজালিয়া ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসায় গণিতের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশাদুর রহমান বলেন, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়, হাবিবুর রহমান নিজেকে ‘ইমাম মাহদী’ দাবি করে এলাকায় বিভিন্নজনের কাছে নানা ধরনের বর্ণনা দিয়ে আসছিলেন। তিনি দাবি করেন, আল্লাহ তাঁর সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন এবং তাঁর ওপর ‘নব’ ওহি নাজিল হয়েছে। এমনকি তিনি বলেন, তাঁর ওপর ‘আল-কুরআনের ১১৫তম সূরা মাহদিয়া’ নাজিল হয়েছে।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, হাবিবুর রহমান এর আগেও দাবি করেছেন, আল্লাহ তাঁকে জান্নাত দান করেছেন এবং তাঁর মা ও চাচি জাহান্নামী। তিনি বিভিন্ন সময় শবে কদর, আল্লাহর দর্শন ও নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গে কথোপকথনের দাবি করেছেন।
ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গলাচিপা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে তিনি স্থানীয় ইমাম ও খতিব মো. তাওহীদুল ইসলামের কাছে নিজেকে ‘ইমাম মাহদী’ হিসেবে পরিচয় দেন। তখন উপস্থিত লোকজন উত্তেজিত হয়ে তাঁকে আটক করে, পরে পুলিশ এসে তাঁকে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় বাহের গজালিয়া ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. অলিউল্লাহ বাদী হয়ে গলাচিপা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাঁর অভিযোগ, হাবিবুর রহমান ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করছেন এবং ইসলাম ধর্ম ও নবী করিম (সা.)-এর নামে মনগড়া তথ্য প্রচার করছেন।
ওসি আশাদুর রহমান বলেন, “এটি একটি স্পর্শকাতর বিষয়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানায় তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
##
সিকদার জাবির হোসেন, পটুয়াখালী
আপনার মন্তব্য লিখুন