কলাপাড়ায় বাড়ছে ইলিশের সরবরাহ

পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় দক্ষিণের সর্ববৃহৎ মোকাম মহিপুর-আলীপুরে ইলিশের সরবরাহ অনেকটা বেড়েছে। দামও সাইজ ভেদে মণ প্রতি ১০-২০ হাজার টাকা কমেছে। তবে এখন পর্যন্ত জেলেসহ ট্রলার মালিকদের কাক্সিক্ষত ইলিশ মিলছে না। লম্বা জালের বড় ট্রলারের জেলেরা কিছু ইলিশ শিকার করে ফিরছেন। গভীর সমুদ্রে, কিনার থেকে অন্তত ১৫০-১৬০ কিলোমিটার গভীর সাগরবক্ষে কিছু ইলিশের দেখা মিলছে। তাও সর্বোচ্চ একেকটি ট্রলারে ইলিশসহ অন্য সামুদ্রিক মাছ মিলে গড়ে ১২/১৩ থেকে ২০/২২ মণ মাছ মিলছে।

- বিজ্ঞাপন -

তবে শতকরা ১৫-২৫ শতাংশ ট্রলার এ পর্যন্ত কমবেশি মাছের দেখা পেয়েছেন। ২২-২৩ জন জেলে নিয়ে বড় ট্রলারে গভীর সাগরবক্ষে যাওয়া বাঁশখালীর কিছু ট্রলার ইলিশ শিকার করে ফিরছেন। আলীপুরের মৎস্য আড়ত মালিক মেসার্স খান ফিশের স্বত্তাধিকারী আব্দুর রহিম খান এ খবর জনকণ্ঠকে নিশ্চিত করেন। তবে তিনি জানান, কিছু ইলিশ মিললেও কেউ এখন পর্যন্ত এবারের লোকসান কাটাতে পারেননি।
তিনি জানান, শুক্র ও শনিবারের কয়েকটি আড়তে ৫০-৬০ মণ করে আবার সর্বোচ্চ কোনো আড়তে ৬০-৭০ মণ ইলিশের আমদানি হয়েছে। যা এক কেজির চেয়ে বড় সাইজের ইলিশ পাইকারি বিক্রি হয়েছে ৯০ হাজার টাকা মণ দরে। যা আরও এক সপ্তাহ আগে এক লাখ ২০ হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে। একইভাবে ৮০০-৯০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭৫-৮০ হাজার। এভাবে ৬০০-৭০০ গ্রাম সাইজের ৫০-৬০ হাজার, ৪০০-৫০০ গ্রামের সাইজ বিক্রি হয়েছে ৪০-৪৫ হাজার এবং এর ছোট সাইজের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২৫-২৬ হাজার টাকা মণ দরে।

মহিপুর-আলীপুরে দেড় শতাধিক মৎস্য আড়তে এভাবে সর্বোচ্চ ৩০-৩৫টি আড়তে প্রতিদিন কমবেশি ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের আমদানি হচ্ছে। যা বিগত বছরগুলোর চেয়ে মাত্র এক পঞ্চমাংশ। আহরিত ইলিশের পরিমাণ কম থাকায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন মোকামের পাইকাররা এই ইলিশ আগেভাগেই চড়া দামে কিনে নিচ্ছেন। ফলে স্থানীয় বাজারের পাইকারদের নাগালে থাকছে না ইলিশ। কমবেশি কিছুটা নি¤œমানের ইলিশ স্থানীয় বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে। তবে তার দামও অনেক বেশি। সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয় সক্ষমতার মধ্যে নেই।

মহিপুর মৎস্য আড়ত মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাজু আহমেদ রাজা জানান, প্রতিদিন ১০-১২টা আড়তে কমবেশি কিছু ইলিশ আমদানি হচ্ছে। মূলত প্রাণচাঞ্চল্য নেই। শতকরা ৯০ জন ট্রলার মালিক এখনো কোটি কোটি টাকার লোকসানে রয়েছেন। তিনি জানান, শুধু ট্রলার, আড়ত মালিক ও জেলে নয়। মহিপুরে এই মৌসুমে কর্মরত আট শতাধিক বিভিন্ন ধরনের শ্রমিকরা অনেকটা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। তাদেরও কষ্ট হচ্ছে। রোজগার নাই। পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে আছেন। মালিক সমিতির এই নেতা জেলে ও শ্রমিকদের উদ্ধৃতি দিয়ে জানান, বহু জেলে শ্রমিক এমন দুরাবস্থায় রয়েছেন, যে দাঁড়ি-চুল কেটে সেলুনের টাকা পর্যন্ত বাকি রাখতে হয়।
কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, গত ১১ জুন অবরোধ শেষ হওয়ার পরে গত এক মাসে মহিপুর-আলীপুর মোকামে ২৬৫ টন ইলিশের আমদানি হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১৩২ মেট্রিকটন সামুদ্রিক মাছের আমদানি হয়েছে। আরও বাড়বে ইলিশসহ সামুদ্রিক মাছের আমদানি। আর তখন থেকে দামও ক্রমশ কমবে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে।

- বিজ্ঞাপন -

আপনার মন্তব্য লিখুন

- Google -

আরও পড়ুন

Back to top button