For Advertisement

এক মাসে কতটা ওজন কমানো নিরাপদ ?

৮ মে ২০২৫, ১০:১৮:৫৭

ওজন কমানো নিয়ে আজকাল সোশ্যাল মিডিয়া ও অনলাইন দুনিয়ায় রয়েছে নানান চটকদার দাবি—কখনও তিন দিনে পাঁচ কেজি, কখনও সপ্তাহে ১০ পাউন্ড। কিন্তু এইসব তাড়াহুড়োর পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে ভয়ানক স্বাস্থ্যঝুঁকি। তাই প্রশ্ন ওঠে সুস্থ থেকে এক মাসে কতটা ওজন কমানো নিরাপদ। এই প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের স্থূলতা ও ওজন নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ ডা. পেমিন্ডা ক্যাবানদুগামা।

বিষয়টি নিয়ে ডা. ক্যাবানদুগামা বলেন, সাধারণভাবে প্রতি সপ্তাহে ১ পাউন্ড (প্রায় ০.৪৫ কেজি) ওজন কমানোই সবচেয়ে নিরাপদ এবং টেকসই। আর মাসে সর্বোচ্চ ৮ পাউন্ড (প্রায় ৩.৬ কেজি) পর্যন্ত কমানো যেতে পারে, তার বেশি নয়। তিনি আরও জানান, তিন মাসে মোট ওজনের ৫ শতাংশ কমানো একটি বাস্তবসম্মত ও স্বাস্থ্যকর লক্ষ্য হতে পারে।

অতিরিক্ত দ্রুত ওজন কমালে কী ঝুঁকি থাকে: খুব দ্রুত ওজন কমালে শরীর কেবল চর্বি নয়, পেশি ও হাড় থেকেও ওজন হারাতে শুরু করে। এর ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং দেখা দেয় নিচের সমস্যাগুলো:

  • পানিশূন্যতা, মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
  • পেশির ক্ষয়, ব্যথা ও খিঁচুনি
  • হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়া, দাঁত নরম হওয়া
  • হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়া (বিশেষ করে নারীদের ঋতুচক্রে সমস্যা)
  • অপুষ্টিজনিত সমস্যা, মারাত্মক ক্ষেত্রে মৃত্যুও

সুস্থভাবে ওজন কমানোর সেরা উপায়: ডা. ক্যাবানদুগামার মতে, একটি নিরাপদ ও কার্যকর ওজন কমানোর পরিকল্পনায় যা থাকা জরুরি—

দৈনিক ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণ: পুরুষদের জন্য গড়ে ১৮০০ ক্যালোরি, নারীদের জন্য ১৫০০ ক্যালোরি। তবে এটি বয়স, উচ্চতা ও দৈহিক কার্যক্রম অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।

নিয়মিত ব্যায়াম: প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট শারীরিক অনুশীলন। এর মধ্যে অন্তত দুই দিন ৩০ মিনিট করে রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং (যেমন ওজন তোলা) থাকা দরকার।

শুধু ডায়েট বা জিম নয়, সফল ও টেকসই ওজন কমানোর জন্য দরকার পুষ্টিবিদ ও ফিটনেস ট্রেনারের পরামর্শ দরকার। ছবি: সংগৃহীত

সম্পূর্ণ সাপোর্ট টিম: শুধু ডায়েট বা জিম নয়, সফল ও টেকসই ওজন কমানোর জন্য দরকার পুষ্টিবিদ ও ফিটনেস ট্রেনারের পরামর্শ দরকার।

পুষ্টিকর খাবার বেছে নিন: শুধু খাবার বাদ দিলেই ওজন কমে না—শরীরকে পুষ্টি জুগিয়ে সুস্থ রাখা জরুরি। ডা. ক্যাবানদুগামা পরামর্শ দেন:

  • প্রোটিন: মুরগি, মাছ, ডাল, টোফু—পেশি টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করে
  • ভাল ফ্যাট: অ্যাভোকাডো, বাদাম, অলিভ অয়েল—পেট ভরায় ও পুষ্টি শোষণ বাড়ায়
  • কার্বোহাইড্রেট: কোয়িনোয়া, মিষ্টি আলু, ব্রাউন রাইস—শক্তি ও হজমে সহায়ক
  • সবজি ও ফল: পালং শাক, বেল পিপার, বেরি—অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও প্রদাহ রোধে কার্যকর

যে বিষয়গুলো ওজন কমানোকে প্রভাবিত করে-

  • বয়স বাড়লে বিপাক হার কমে যায়
  • হরমোন ও জিনগত বিষয়
  • থাইরয়েড, পিসিওএস-এর মতো সমস্যা
  • ঘুমের ঘাটতি, মানসিক চাপ
  • ইমোশনাল ইটিং বা খাবার নিয়ে মানসিক টানাপড়েন

ডা. ক্যাবানদুগামা বলেন, যে কোনও ডায়েট একা চললে তা টেকসই হয় না। গবেষণায় দেখা গেছে—দুই বছর পর কেবল ডায়েট করে ওজন ধরে রাখা প্রায় অসম্ভব, যদি না তার সঙ্গে ব্যায়াম যোগ করা হয়।

অতএব, সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হলো এমন খাদ্যাভ্যাস বেছে নেয়া, যা দীর্ঘমেয়াদে চালিয়ে যাওয়া যায় এবং নিজের জীবনযাত্রার সঙ্গে মানিয়ে যায়। ওজন কমানোর কেবল ক্যালোরির হিসেব নয়, বরং স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে নানান পরিবর্তন।তাই ধৈর্য ধরুন এবং বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিন।

For Advertisement

Unauthorized use of news, image, information, etc published by দৈনিক আমাদের পটুয়াখালী is punishable by copyright law. Appropriate legal steps will be taken by the management against any person or body that infringes those laws.

Comments: